রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এই সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের কর্মীরা বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকলে রাবি ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
তবে মহানগর ছাত্রলীগের দাবি, তাদের ওপর হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কেউ নন, তারা উপাচার্যের ‘গুন্ডাবাহিনী’।
মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘ভিসি ছাত্রলীগের নাম করে বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। এমন খবর পেয়ে আমরা ক্যাম্পাসে যাই। সে সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ভিসির গুন্ডাবাহিনী আমাদের ওপর হামলা চালায়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কেউ ছিলেন না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতারা কোনো মন্তব্য করতে চাননি। কথা বলতে রাজি হননি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লুৎফর রহমানও।
তবে কথা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কামরুজ্জামান চঞ্চলের সঙ্গে। তিনি জানান, মেয়াদের শেষ দিন বৃহস্পতিবার উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান চাকরিপ্রত্যাশী ১২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রচার হয়। তা শুনে মহানগর ছাত্রলীগের চাকরিপ্রত্যাশীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। তারাও চাকরি দাবি করেন।
চঞ্চল বলেন, ‘তাদের (মহানগর ছাত্রলীগের) এমন ভাব যেন এখনই তাদের নিয়োগ দিতে হবে। এ নিয়ে সেকশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা হামলা চালায়। এ সময় আমি এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও লাঞ্ছিত করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার সময় রাবি ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী সেখানে ছিল। তারা এগিয়ে গেলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। পরে রাবির কর্মকর্তা কর্মচারি, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে মহানগর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশ এসে লাঠিচার্জ শুরু করলে দুই পক্ষই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।’
কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন চলছে। গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগের বাধার মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিন্ডিকেট সভা স্থগিত করে।
সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ইলিয়াস হোসেন নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘উপাচার্য বাসভবনে সকাল ১০টার দিকে সিন্ডিকেট সভা হওয়ার কথা ছিল। নিজের মেয়াদের শেষ এই সিন্ডিকেটকে ঘিরে উপাচার্য অনিয়ম করতে পারে ও অবৈধভাবে এডহকে জনবল নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে আমরা জেনেছি। এই পরিস্থিতিতে আমরা উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের শিক্ষকরাও এখানে উপস্থিত রয়েছেন।’
তার আগের দুদিন ধরে উপাচার্য ভবনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফাইন্যান্স কমিটির সভা স্থগিতের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতা-কর্মীরা। সভা স্থগিত করতে তারা উপাচার্য এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনে, সিনেট ভবনে ও দুটি প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।